আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস এবং কুষ্টিয়াতে আজ মুক্ত দিবস

আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস

পাহাড় প্রকৃতির মাঝে এক নান্দনিক সৌন্দর্য এর আধার, যা প্রকৃতির ভারসাম্যকে রক্ষা করে থাকে।আজ আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস।

পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং টেকসই ভবিষ্যত্ সামনে রেখে জাতিসংঘ এর ২০০৩ সালে ১১ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিকভাবে পর্বত দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিলো। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য এর ‘পার্বত্য এলাকায় এই টেকসই পর্যটন’।

পর্বত-দিবস.jpg
চন্দ্রনাথ পাহাড়

বলার অপেক্ষা রাখেনা, পাহাড়-পর্বত প্রকৃতির অপরূপ দান। বাংলাদেশের মোট ভূমির এক পঞ্চমাংশ হচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চল।  বিশেষ করে পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আট ভাগ পাহাড়ি অঞ্চল অবস্থিত। বাকি দশ ভাগ অবস্থিত দেশের অন্যান্য অঞ্চলে।  অর্থাৎ সিলেট অঞ্চলে বেশ কিছু টিলা পাহাড় রয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলানিকেতন এই টিলা পাহাড় দেশি বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।  অথচ এই টিলা পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে। 

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব এবং মানুষের অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খরা, অতিবৃষ্টি,ঝড়-ঝঞ্ঝাট, অন্যদিকে বৃক্ষনিধনের মাধ্যমের বন উজাড়, দুইয়ের প্রভাবে পার্বত্য এলাকায় প্রাকৃতিক ভাবে ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। 

প্রদত্ত বাণীগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সাল হতে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের শান্তি চুক্তির আলোকে পার্বত্য অঞ্চলগুলোর সার্বিক উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল এর দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিত এর মধ্যে এই ঐতিহাসিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকে । এটি  বিশ্ব ইতিহাসের একটি বিরল ঘটনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল এর দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর আর অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে শান্তি আর উন্নয়নের ধারা। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জনের এই চুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।

আরো জানুন:

বাংলাদেশের খবর: টেস্ট সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ, লজ্জার হার মুমিনুলদের

কুষ্টিয়াতে মুক্ত দিবস আজ

আজ ১১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়া জেলাকে শত্রুমুক্ত করেন। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগেই কুষ্টিয়ার জনগণ বিজয় অর্জন করেছিলো।

১৯৭১ সালের সেই দিনের অনুভূতি তুলে ধরে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ ভোর রাতেই পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয় কুষ্টিয়া। প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে ১ এপ্রিল রাতে পাকবাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারপর দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ দিন পর আবারো কুষ্টিয়া দখল করে নেয় পাকবাহিনী।

 কুষ্টিয়াতে-আজ-মুক্ত.jpg
কুষ্টিয়াতে আজ মুক্ত দিবস

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। এরমধ্যে ২৬ নভেম্বর সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। ৯ ডিসেম্বরে কুষ্টিয়া শহর ছাড়া সমস্ত এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। শহর মুক্ত করতে শুরু হয় তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের অসংখ্য মানুষ নিহত হয়। ১১ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী বলেন, ৯ মাস ধরে যখন থেমে থেমে যুদ্ধ হয়, তখন বাঙালি নিধন আর গণহত্যার উৎসবে মেতে উঠে পাকবাহিনী। ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, কুষ্টিয়া শহরের ১৬ জন শহীদ হন, বিহারী কলোনির কোহিনুর ভিলার মধ্যে ।এ জেলার মধ্যে এটি একটি পরিবার এর উপর সবচেয়ে বড় সংঘটিত গণহত্যা।

কুষ্টিয়া শহরে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে হানাদার পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের সমাধি হিসেবে বংশীতলা,কুমারখালী, বিত্তিপাড়াসহ আরো কিছু জেলার মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক গণকবর রয়েছে।হাজারো ব্যক্তিদেরকে এসব স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যে স্বপ্ন ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে লক্ষ প্রাণের বলিদান, সেই স্বপ্ন পূরণ এখনও সুদূর পরাহত। এর আগে খোকসারায় হবে  ৪ ডিসেম্বর, আমলাসদরপুরে হবে ৭ ডিসেম্বর,মিরপুরে ৮ ডিসেম্বর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা থানা এবং

 ৯ ডিসেম্বর কুমারখালী থানার মধ্যে পাকহানাদার মধ্যে মুক্ত দিবস পালিত হয়।

এ বিজয়ের দিনটিকে উদযাপন করতে হলে জেলাপ্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা,,সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন এর নানা অনুষ্ঠান পালন করার জন্য আয়োজন করেছে।

অন্যান্য খবর সম্পর্কে জানুন:

প্রথম আলো: আবরার হত্যাকাণ্ডের রায় মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে নতুন ভাবনার জন্ম দিক

বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।

Comments are closed.