ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ

ইউক্রেন হামলা জোরদার করা: পশ্চিমা শক্তি এবং মস্কো শুক্রবার জ্বালানি বিষয়ে বেদনাদায়ক ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি একে অপরের প্রতি পাল্টা আঘাত করেছে।

ইউক্রেন বলেছে যে, তারা একটি পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে একটি রাশিয়ান ঘাঁটিতে বোমা হামলা করেছে, যা ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে শুক্রবার থেকে রাশিয়া জার্মানীতে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ

Table of Contents

ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ: সাতটি প্রধান শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশের গ্রুপ রাশিয়ান তেল আমদানিতে মূল্যসীমা নির্ধারণের জন্য জরুরীভাবে অগ্রসর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জ্বালানি রফতানি মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাজস্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার এই পদক্ষেপের ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,  ‘যুদ্ধের কারণে জ্বালানি বাজারের অনিশ্চয়তা থেকে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে এবং তেল রপ্তানি থেকে বড় মুনাফা করছে এবং আমরা এটিকে নিষ্পত্তিমূলকভাবে মোকাবেলা করতে চাই।’

তিনি বলেন, তেল রপ্তানির মূল্যসীমার লক্ষ্য ছিল ‘আগ্রাসনমূলক যুদ্ধের অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস বন্ধ করা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি মূল্যের বৃদ্ধি রোধ করা।’

ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ

সিদ্ধান্তের আগে, ক্রেমলিন সতর্ক করেছিল যে, এই পদক্ষেপ তেলের বাজারকে অস্থিতিশীল করবে। পশ্চিমারা জ্বালানি তেলের বিকল্প হিসেবে রাশিয়া থেকে সরবরাহকৃত গ্যাস ব্যবহারে আগ্রহী, তবে এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার নীতিকে যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানির ‘অস্ত্রীকরণ’ হিসেবে নিন্দা করেছে।

রাশিয়ান গ্যাস জায়ান্ট গ্যাজপ্রম বলেছে,একটি টারবাইনে ছিদ্র থাকায় তারা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়ার সমালোচকরা এ উদ্যোগের নিন্দা জানিয়ে ছিল।

গ্যাজপ্রম এর আগে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিল, সেন্ট পিটার্সবার্গকে বাল্টিক সাগরের নীচে জার্মানির সাথে সংযুক্ত নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে শনিবার তারা পুনরায় গ্যাস সরবরাহ শুরু করবে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ খুচরা যন্ত্রাংশের অভাবকে দায়ী করে বলেছেন, ‘পুরো সিস্টেমের অপারেশনের নির্ভরযোগ্যতা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’

গ্যাজপ্রমের টারবাইনের জার্মান নির্মাতা সিমেন্স এনার্জি বলেছে, গ্যাজপ্রম যে ছিদ্র থাকার সমস্যা চিহ্নিত করেছে, তা অপারেশন বন্ধ করার কারণ নয়।

রাশিয়ান সৈন্যদের দখলে থাকা ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র জাপোরিঝিয়ায় ক্রমবর্ধমান শঙ্কার মধ্যে জ্বালানির উপর এই চাপ আসে।

ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ

ইউক্রেন বলেছে যে, তারা জাপোরিঝিয়া কেন্দ্রের কাছের শহর এনারগোদারে একটি রাশিয়ান ঘাঁটিতে বোমা হামলা করেছে, তিনটি আর্টিলারি সিস্টেমের পাশাপাশি একটি গোলাবারুদ ডিপো ধ্বংস করেছে।

দক্ষিণ ইউক্রেনের এনারগোদারের কিয়েভপন্থী মেয়র দিমিত্রো অরলভ তার নির্বাসিত অবস্থান থেকে এএফপি’কে বলেছেন, শহরে ফোন পরিষেবাগুলি চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা’র (আইএইএ) প্রধানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের শক্তিশালী দল জাপোরিঝিয়া পরিদর্শন করছে। জাতিসংঘের এই পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গোসি বলেছে যে যুদ্ধে সাইটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে যে, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের দল আসার আগে রাশিয়ান বাহিনী সাইট থেকে তাদের সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে।

রাশিয়ার সেনারা মার্চের শুরুতে জায়গাটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। কেন্দ্রের আশেপাশে বারবার হামলা হয়েছে, তবে মস্কো এবং কিয়েভ উভয়ই দায় অস্বীকার করেছে এবং একে অপরকে দোষারোপ করেছে।

জাতিসংঘের পরিদর্শকরা শুক্রবার জাপোরিঝিয়ায় তাদের দ্বিতীয় দিন কাটিয়েছেন। ভিয়েনায় রাশিয়ার দূত মিখাইল উলিয়ানভ বলেছেন, ছয়জন আইএইএ পরিদর্শক বেশ কয়েকদিন থাকবেন এবং আরও দ’ুজন সেখানে ‘স্থায়ী ভিত্তিতে’ অবস্থান করবেন।

ইউক্রেন হামলা জোরদার করায় পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর চাপ

তিনি রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তিকে’ বলেছেন ‘আমরা এটিকে স্বাগত জানাই কারণ, একটি আন্তর্জাতিক উপস্থিতি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থা সম্পর্কে অনেক গুজব দূর করতে পারে।’

আরও দেখুনঃ