শিক্ষার্থীদের জন্য এডিস মশা মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ৩ তিনদিনের বিশেষ কর্মসূচি : দীর্ঘ দেড় বছর পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সকল সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দীর্ঘ বিরতীর পর স্কুল কলেজে আসবে শিক্ষার্থীরা। বর্তমান করোনা অতিমারির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অভিভাবকদের ভাবনায় ফেলে দিয়ে ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর বিষয়ে।
তাই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ডেঙ্গু মুক্ত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে তিন দিনের, দিনব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। বিশেষ এই রকম একটি কর্মসূচি সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘শিক্ষার জন্য সুস্থ পরিবেশ’ এই স্লোগানটি নিয়ে আমরা আগামী তিন দিনে ৮ সেপ্টেম্বর, ৯ সেপ্টেম্বর এবং ১০ সেপ্টেম্বর পজন্ত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটি সরকারি, আধা সরকারি আর বেসরকারি স্কুল কলেজে যাব, আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও যাবে মশক কর্মীরা যাবে তারা গিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি লার্ভিসাইডিং আর ফর্গি করে আসবে।
প্রায় দেড় বছর পর বাচ্চা আসবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে, ওরা যেন নির্ভয়ে এসে পড়ারেশানা করতে পারে, অভিভাবকরাও যেন নির্ভয়ে পাঠাতে পারেন। যেন আমার এডিস থেকে মুক্ত থাকতে পারি সেজন্যই এই কর্মসূচি।
বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর) গুলশান-২ এর গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজে বিশেষ এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মেয়র। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা আর তার প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহা: আমিরুল ইসলাম, এই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান এর গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ এম. মুস্তাফা জামান মিয়া, ১৯নং এর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, আঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহীদের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী প্রমুখ।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, শিক্ষার জন্য সুস্থ পরিবেশ এই স্লোগানটি নিয়ে আমরা ৮ সেপ্টেম্বর, ৯ সেপ্টেম্বর আর ১০ সেপ্টেম্বর এই তিনটি দিন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের যত ধরনের সরকারি আধা সরকারি বেসরকারিসহ প্রত্যেকটি স্কুলে আমরা আমাদের পরিস্কার পরিচ্ছন্নকর্মীদের দল এবং আমাদের মশককর্মীদের সাথে করে আমরা ৫৪টি ওয়ার্ডের শিক্ষার জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রায় ৪৫০ টি স্কুলে অভিযান পরিচালনা করব। এছাড়া যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪০টির মতো সেখানে আগামী শনিবার বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
তিনি অভিযানটিকে সফল করতে সকল স্কুলের পরিচালক আর প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষকবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আপনারা আপনাদের স্কুলটা খোলা রাখবেন আর আপনারা মনিটরিং করবেন আমাদের কর্মীরা গিয়ে লার্ভিসাইডিং করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেছে কি বা না? বিশেষ করে স্কুলের টয়েলেটের ভেতরে যেন প্রত্যেকে যায় আর পরিস্কার করে। কেননা প্রতিটি স্কুলের ভিতর বাচ্চারা স্কুলে আসবে প্রায় দেড়টি বছর পর। অনেকেই জানেন না তার স্কুলের বাথরুমে বা ছাঁদে এডিসের লার্ভা জমে আছে। আমাদের বাচ্চারা স্কুলে এসে যেন এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হন। তাই
সকল স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি আপনারা আমাদের কাউন্সিলর, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সবার ঢাকা অ্যাপসে দ্রুত জানান যে কোনো স্কুল বাদ পড়েছে কি না। অথবা আমাদের সবার ঢাকা অ্যাপসে জানিয়েছে আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মীরা মশক কর্মীদের সকল টিম সেখানে যাবে। আর সবখানে আমরাও যাব।
মেয়র বলেন, এমনিতেই করোনা অতিমারি একটা চ্যালেঞ্জ তার মধ্যে ডেঙ্গু আর একটি চ্যালেঞ্জ। দুটো চ্যালেঞ্জে এক সঙ্গে কঠিন চ্যালেঞ্জে দাঁড়ায়। সেজন্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন চলে এসেছে। আমরা চাই কিভাবে সমন্বয় করে এক সাথে প্রতিটি স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিস্কার করতে পারি তাহলে বাচ্চারা আসবে নিরাপদে ক্লাস করে চলে যেতে পারবে। দেখা যাবে বাচ্চারা আসবে কিন্তু বাথরুমে যদি এডিসের লার্ভা থাকে কমোডের ভেতর যদি এডিসের লার্ভা থাকে সেটা আরও চ্যালেঞ্জে হয়ে দাঁড়াবে। বাচ্চারা আসবে ওরা যেন নির্ভয়ে এসে পড়ারেশানা ঠিকঠাক ভাবে করতে পারে, অভিভাবকরাও যেন নির্ভয়ে তাদের সন্তানদেরকে পাঠাতে পারেন, যেন আমরা এডিস থেকে মুক্ত থাকতে পারি সেজন্য এই ধরনের উদ্যোগ।
মেয়র বলেন, অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ আপনার জানান আমাদের জানান, আমাদের সবার ঢাকা অ্যাপসে অথবা কাউন্সিলরদের কিমবা আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা হট লাইনে জানান কোন স্কুল বাদ থাকলে আমাদের জানিয়ে দেন আমাদে টিম সেখানে চলে যাবে। আমরা যদি এডিস মুক্ত করতে পারি তাহলে ডেঙ্গু হবে না। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে স্কুলে আসতে পারবে শিক্ষার জন্য সুস্থ পরিবেশ বজয়া থাকবে। আর প্রত্যেক অভিভাবক তার সন্তানকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে স্কুলে পাঠাবেন।
সকাল সাড়ে ১০ টার গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজে উপস্থিত হয়ে মেয়র পুরো স্কুলের প্রতিটি ভবনের প্রতিটি ক্লাস রুম পরিদর্শন করেন এবং ফগিং এর পাশাপাশি লার্ভিসাইডিং করান দাঁড়িয়ে থেকে। পাশাপাশি প্রতিটি বাথরুমেও লার্ভিসাইডিং এবং ফগিং করান। এছাড়া পুরো স্কুলের মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করানো হয়। মেয়রের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যক্ষ এম. মুস্তাফা জামান মিয়া বলেন, সত্যি আমরা চিন্তাও করতে পারিনি স্কুলের ভেতরে এভাবে এডিস মশা থাকতে পারে। আমরা অনেক জায়গায় বুঝতেই পারিনি সেখানে মশা থাকতে পারে। কিন্তু মেয়র যে উদ্যোগ নিলেন তাতে আমি সাধুবাদ জানাই। এই উদ্যোগের ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ পরিবেশ পাবে।
এডিস মশা সম্পর্কে আরও জানতে : উইকি
এ বিষয়ে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল:
- বাংলাদেশের খবর : ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মারা গেছেন বয়সী পুরুষ!
- বাংলাদেশের খবর : ডেঙ্গু হলে যে সকল খাবার খাওয়া উচিত?
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে:
- উইকিপিডিয়া : ডেঙ্গু জ্বর
- উইকিপিডিয়া : এডিস মশা
বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।
Comments are closed.