স্বপ্নের পদ্মা সেতু: দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আজ যেনো ঈদ আনন্দ

স্বপ্নের পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার খবরে আনন্দে আত্মহারা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষজন। তারা বলেন- স্বপ্নের পদ্মা সেতু যেনো আজ আমাদের কাছে ঈদ আনন্দ।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর ফলে যশোর থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১৫৭ কিলোমিটার, বেনাপোল থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৯৩ কিলোমিটার এবং নড়াইল থেকে ঢাকার দূরত্ব ১২৭ কিলোমিটার হবে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ যেনো ঈদ আনন্দ

যশোর জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি: নং-২২৭) সভাপতি আজিজুল ইসলাম মিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে যশোর, বেনাপোল, নড়াইল, খুলনা, ঢাকাসহ আশেপাশের জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এ সেতু চালুর ফলে ঢাকা থেকে যশোর, বেনাপোলসহ অন্যান্য জেলায় কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার দেড়শ কিলোমিটার কমে যাবে। এছাড়া শিল্প শহর যশোরের নওয়াপাড়া এবং সাতক্ষীরা স্থলবন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে।

নড়াইল  জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক কাজী জহিরুল হক জহির বলেন, এই ভালো লাগা ভাষায় বোঝানোর মত নয়। বহু প্রতিক্ষীত পদ্মা সেতু আমাদের জন্য গৌরবের।

পরিবহণ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগের সহজতর পথ এ রুট দিয়ে। উৎসব আর ছুটির দিনে ঘাটে বাড়ে মানুষের চাপ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে থাকা এসব কিছু পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষের অসহনীয় ভোগান্তি দূর হবে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন যশোর, স্থলবন্দর বেনাপোলসহ নড়াইল অঞ্চলের যাত্রীরা। সেতু চালুর দিনক্ষণ ঘোষণায় যাত্রীদের চোখে মুখে স্বস্তির ঝিলিক।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ যেনো ঈদ আনন্দ

বিশেষ করে কুরবানির ঈদে এবার আর চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে না। ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হবে না পদ্মা নদী। ফেরি ঘাটে পার হওয়ায় জন্য যানবাহন নিয়ে চালক ও যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার অবসান হবে।

এ আনন্দ এখন থেকেই যাত্রীদের চোখে মুখে দেখা যাচ্ছে।বহুল প্রত্যাশিত পদ্মাসেতু চালুর খবর এ এলাকার মানুষের মুখে মুখে।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ির বাসিন্দা ঢাকায় ব্যবসায়ি হিসেবে কর্মরত মো. ইমদাদ হোসেন বলেন,পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে এবং ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা যারা এ রুটের যাত্রী তারা বুঝি ঘাটের দুর্ভোগ কত অসহনীয়। স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ যেনো আমাদের কাছে ঈদ আনন্দ।

রুপগঞ্জ বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী প্রকাশ কুন্ডু বলেন, সেতু চালুর মধ্য দিয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে ব্যবসায়িক কাজ সেরে আবার বিকেলে ফিরে আসতে পারবো।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছাদেক আহম্মেদ খান জানান, পদ্মাসেতু রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।

ফেরিঘাটের অপেক্ষা আর যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না যাত্রী ও পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের। যাত্রীসাধারণের পাশাপাশি পরিবহণে কৃষিপণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রেও সহজ হবে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ যেনো ঈদ আনন্দ

এ অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতার বড় সাফল্য পদ্মাসেতু। সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নদীর আর কোনো প্রতিবন্ধকতা রইল না।

বাস চালক মকতুল হোসেন জানান, ফেরিঘাট মানেই ভোগান্তি। তাদের আশা পদ্মাসেতু চালু হলে সেই কষ্ট আর থাকবে না। এই সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি জানান।

পরিবহণ মালিক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান,নড়াইল থেকে কাঁঠালবাড়ি বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত বর্তমানে খানজাহানআলী পরিবহণ চলাচলরত আছে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ যেনো ঈদ আনন্দ

পদ্মাসেতু চালু হলে নড়াইল থেকে সরাসরি ঢাকা যেতে পারবে পরিবহণগুলো। এতে যাত্রীরা দূর্ভোগের হাত থেকে পরিত্রাণ পাবে। এ সেতু চালুর মধ্য দিয়ে পরিবহণ ব্যবসায়ে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো।

আরও দেখুনঃ

যশোরের চাঁচড়া হ্যাচারী পল্লীতে রেণু পোনা বিক্রি শুরু

হাতি সংরক্ষণে নতুন প্রকল্প নিয়ে আসছে বন বিভাগ

খাদ্য নিরাপত্তায় দেশের কৃষিজমি সুরক্ষা প্রয়োজন : তথ্যমন্ত্রী

যশোর

Comments are closed.