প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উন্নয়নশীল দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে,৩০টি কারখানা।
উন্নয়নশীল দেশের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, আমরা সেটা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এগিয়ে যাচ্ছি।
(৮ ডিসেম্বর) বুধবার ভিডিও কনফারেন্সিংর এর মাধ্যমে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ প্রদান আর মহিলা কর্মজীবী এর হোস্টেলসহ আটটি নব নির্মিত স্থাপনা এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে উঠেছে, এটা আমরা বলতে পারি। তিনি বলেন, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ২০০৮ সালে যে লক্ষ্য স্থির করেছি, সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ এর জন্য স্বীকৃতি পেয়েছি। তবে উন্নয়নশীল দেশের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, আমরা সেটা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি ।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল। আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে সবাইকে আশ্রয় দিবো। যাদের জমি আছে তাদেরও ঘর করে দিচ্ছি। চরাঞ্চলে শুধু টিনের ঘর করে দিবো, যাতে নদী ভাঙন দেখা দিলে সরিয়ে আনা যায়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু ঘর করে দিচ্ছি। মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে আওয়ামী লীগ সরকার সবই করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সংকটে প্রতিটি কলকারখানা বা প্রতিষ্ঠানে মালিক ও শ্রমিক যেন ঠিকমত কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। করোনা সংকটেও উৎপাদন চলমান রাখায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ভর্তুকি সুবিধাসহ কলকারখানাকে বিভিন্ন সুবিধা আমরা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আগে নারীরা ন্যায্য পাওনা পেতেন না। আমরা ক্ষমতায় এসে নারীদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। তারা যাতে সুন্দরভাবে নিরাপদে থাকতে পারেন সেজন্য শ্রমজীবী হোস্টেল করা হয়েছে। আমরা নারীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্রের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক-মালিকদের একটা সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। মালিকদের যেমন শ্রমিকদের স্বার্থটা দেখতে হবে, কারণ তাদের শ্রমেই এই বিশাল কলকারখানা গড়ে উঠেছে। আবার শ্রমিকদেরও এটা মনে রাখতে হবে এখান থেকেই তাদের নিজের এবং পরিবারের আয়ের যোগান হয়। এজন্য শ্রমিকদেরকে কারখানার প্রতি যত্নবান হতে হবে; কারখানা ঠিকভাবে যেন চলে যেন উৎপাদন যেন বাড়ে।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। এদেশের শিল্প কলখানা যা গড়ে উঠেছে, এগুলো তারই সুযোগ করে দেওয়া। মা যেমন রুগ্ন সন্তানকে যত্ন করে সুস্থ করে তোলেন, সেরকম স্বাধীনতার পর বন্ধ কল কারখানা চালুর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বেসরকারিভাবে কলকারখানা গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।
ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ সালে যে ট্রেড ইউনিয়ন জিয়াউর রহমান বাতিল করেছিলেন, ৮৪ সালে আমরা সেটা আদায় করে নিয়েছিলাম। এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার আমরাই দিয়েছি, আবার আমরাই আদায় করে দিয়েছি।
এদিন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রম অধিদপ্তরের শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল ও শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের আটটি নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া ৩০ প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৩০ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পরে মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেলসহ নবনির্মিত আটটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থাপনাগুলো গুলো হলো-চট্টগ্রামে ছয় তলাবিশিষ্ট শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন দপ্তর, নারায়ণগঞ্জে বন্দর মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেল ও পাঁচ শয্যার হাসপাতাল সুবিধাসহ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, নারায়ণগঞ্জে পাঁচ তলাবিশিষ্ট আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর, গাইবান্ধায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র,বগুড়ায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র ও আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর,।
এছাড়াও বাগেরহাটের মোংলায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, খুলনার রূপসায় চার তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র এবং রাঙামাটির ঘাগড়ায় শ্রম কল্যাণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ।
Table of Contents
আরো জানুন:
বাংলাদেশের খবর: রোহিঙ্গারা ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে,মোবাইলে দৈনিক গড় লেনদেন ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা।
গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে,৩০টি কারখানা
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ছয়টি শিল্প সেক্টরের ৩০টি প্রতিষ্ঠান-কারখানাকে গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে এবছর প্রথম এ অ্যাওয়ার্ড দিলো শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
(৮ ডিসেম্বর) বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনাতায়নে অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল ভাবে সংযুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মনোনিত ৩০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পুরস্কার তুলে দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। পুরস্কার হিসেবে মনোনীত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান/কারখানা পেয়েছে ক্রেস্ট, মেডেল, সার্টিফিকেট এবং এক লাখ টাকার চেক।
পরে প্রধানমন্ত্রী শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রম অধিদপ্তরের শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল এবং শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের আটটি নবনির্মিত ভবন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন।
অ্যাওয়ার্ড পাওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের আছে ১৫টি। এগুলো হলো- রেমি হোল্ডিংস, তারাসিমা অ্যাপারেলস, প্লামি ফ্যাশনস, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও, এ আর জিন্স প্রডিউসার, করণী নিট কম্পোজিট, ক্যানপার্ক বাংলাদেশ অ্যাপারেল (ক্যানপার্ক ইউনিট-২), ডিজাইনার ফ্যাশন, গ্রিন টেক্সটাইল লিমিটেড (ইউনিট-৩), উইসডম অ্যাটায়ার্স, মাহমুদা অ্যাটায়ার্স, ফোর এইচ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, স্মোটেক্স আউটারওয়্যার এবং অকো-টেক্স।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে তিনটি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে এই পদক। এগুলো হলো- হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস।
চা শিল্পে চারটি প্রতিষ্ঠান- গাজীপুর চা বাগান, লস্করপুর চা বাগান, জাগছড়া চা কারখানা ও নেপচুন চা বাগান পেয়েছে এই পদক। এছাড়া চামড়া খাতে পদক পেলো অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এবং এডিসন ফুটওয়্যার।
প্লাস্টিক খাতে তিন প্রতিষ্ঠান- বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস, ডিউরেবল প্লাস্টিককে এবং অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ পদকের জন্য বাছাই করা হয়েছে
ওষুধ খাতের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসকে দেওয়া হয়েছে গ্রিন ফ্যাক্টরি এর অ্যাওয়ার্ড।
নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও দক্ষ শ্রমশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও অধিক পরিমাণে উৎপাদন নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতির গতিকে বেগবান ও টেকসই করাই এর উদ্দেশ্য। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণ এবং দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতিবছর এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
[প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উন্নয়নশীল দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে,৩০টি কারখানা।]
অন্যান্য খবর সম্পর্কে জানুন:
প্রথম আলো: আবরার হত্যার রায়: যা বলছেন বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।
Comments are closed.