মুজিববর্ষের উপহার, সিলেট বিভাগে ২য় পর্যায়ে ঘর পাচ্ছেন আরও ৬ হাজার ২১২ পরিবার

মুজিববর্ষের উপহার, সিলেট বিভাগে ২য় পর্যায়ে ঘর পাচ্ছেন আরও ৬ হাজার ২১২ পরিবার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ” মুজিববর্ষ ” উপলক্ষে ২০ জুন প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বিনামুল্যে জমিসহ নতুন পাকা ঘর পাচ্ছেন সিলেট বিভাগের ৬ হাজার ২১২ পরিবার।
২০ জুন রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গন ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিববর্ষ এর শুভ উদ্বোধন করার পর  এ ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে চাবি হস্তান্তর করা হবে।
মাথা গুঁজার ঠাই নাই, নিজের কোন ঠিকানাও নেই, ভূমিহীন, ছিন্নমূল এসব পরিবার ঘর পাচ্ছেন।

মুজিববর্ষের উপহার, সিলেট বিভাগে ২য় পর্যায়ে ঘর পাচ্ছেন আরও ৬ হাজার ২১২ পরিবারমুজিববর্ষ

 

এনিয়ে তাদের মধ্যে আনন্দের কোন শেষ নেই। স্বপ্নের এ ঘর নিয়ে তাদের প্রতিক্ষার পালা একে একে শেষ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত আগ্রহ ও স্বদিচ্ছায় সরকারী অর্থায়নে মুজিববর্ষএ  নতুন সেমিপাকা বাড়ি পেয়ে  নিজস্ব ঠিকানায় উঠছেন তারা।এ যেনো তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া। সরকার মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশে কোন লোক ভুমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনানুযায়ি তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশনায় এ প্রকল্প দ্রুততম সময়ের মধ্য বাস্তবায়ন হতে চলছে।

সারা দেশের মতো গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল,অসহায় দরিদ্র সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় (১ম ও ২য় ধাপে) এ পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৯৭৮ বেশি পরিবারকে ভুমিসহ বিনামূল্যে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ১ম পর্যায়ে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২ হাজার ৭৩৩ পরিবারকে নতুন ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামীক ২০ জুন স্বপ্নের ঘরে উঠছেন আরও ৬ হাজার ২১২ পরিবার। এসব ঘরের মধ্যে সিলেট জেলায় ১ হাজার ৯২ পরিবার, সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৯৮০ পরিবার, হবিগঞ্জে জেলায় ৪৪১ পরিবার এবং মৌলভীবাজারে ৬৯৯ পরিবার রয়েছেন।মুজিববর্ষ

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিটি ঘর ইটের দেওয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি। এসব সেমিপাকা ঘরে দুইটি শয়নকক্ষ, একটি খোলা বারান্দা, একটি রান্না ঘর এবং একটি শৌচাগার আছে। এর বাইরে সামনে এবং পিছনের অংশে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা। ছিমছাম গোছানো সারি সারি পাকা ঘর। এতদিন যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না তাদের হাতেই উঠেছে এসকল স্বপ্নের বাড়ির চাবি। প্রতিটি এলাকায় ভূমিহীন, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে এই ঘরগুলো।

যা একেকটি পরিবারের সারা জীবনের লালিত স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন ঘটছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে নির্মান করা হয়েছে এ ঘর গুলো। চাবি হস্তান্তরকালে একই সঙ্গে প্রত্যেক সুবিধাভোগীর নামে সরকারি ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক দলিল রেজিস্ট্রেশন, নামজারি সম্পন্নকরণ ও গৃহ প্রদানের সনদ হস্তান্তর করা হবে।

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলায় মোট ঘর পাচ্ছেন ৪ হাজার ১৭৮ পরিবার,সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৯০৮ পরিবার, হবিগঞ্জ জেলায় ৭৮৭ পরিবার ও  মৌলভীবাজারে ১ হাজার ২২৬ পরিবার এ ঘর পাচ্ছেন। এসব ঘরের মধ্যে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্বে সিলেট বিভাগের ২ হাজার ৬৬৮ পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১ হাজার ৪০৬, সুনামগঞ্জে ৪০৭, হবিগঞ্জে ৩১৩ এবং মৌলভীবাজারে ৫৪২ টি পরিবার ছিল। বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) কার্যালয় সিলেট সূত্রে আরও জানা যায়, সিলেট জেলায় বরাদ্দপ্রাপ্ত ঘরের সংখ্যা ৪ হাজার ১৭৮টি। এরমধ্যে ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্বে হস্তান্তর হয়েছে ১ হাজার ৪০৬টি।

২০ জুন ২য় পর্বে হস্তান্তর হবে আরও ১হাজার ৯২টি ঘর। এরমধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ১২৫, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ৪৯, ওসমানীনগর উপজেলায় ১৯৪, বিশ্বনাথ উপজেলায় ১৪১, বালাগঞ্জ উপজেলায় ১৬০, গোলাপগঞ্জ উপজেলায়  ১৮৯, বিয়ানীবাজারে উপজেলায়  ৭৪, জৈন্তাপুর উপজেলায় ১২০ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার ৪০টি পরিবারের মাঝে এসব ঘর হস্তান্তর করা হবে।

 

মুজিববর্ষ

 

এর আগে ২৩ জানুয়ারি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলায় ১৪০টি, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ১৫টি, সিলেট সদর উপজেলায় ১৭টি, ওসমানীনগর উপজেলায় ১৪০টি, বিশ্বনাথে উপজেলায় ১২০টি, গোলাপগঞ্জ উপজেলায়  ৭৭টি, বিয়ানীবাজারে ৫০টি, গোয়াইনঘাটে ২৫০টি, জৈন্তাপুরে ১২০টি, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ৭২টি, কানাইঘাট উপজেলায় ১৯৩টি, জকিগঞ্জ উপজেলায়  ৫৫টি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৫৭টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়। এদিকে সুনামগঞ্জ জেলায় গত ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্যায়ে হস্তান্তর হয়েছে ৪০৭টি নতুন ঘর।

আর ২০ জুন ২য় পর্বে হস্তান্তর হবে ৩ হাজার ৯৮০টি পরিবারকে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হবে। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ৪০০টি, দোয়ারাবাজারে ২৬৪টি, বিশ্বম্ভরপুরে ১৯০ টি, ছাতকে ১৭৫টি, জগন্নাথপুরে ৯২টি, ধর্মপাশায় ৩০০টি, জামালগঞ্জে ২৯৭টি, দিরাইয়ে ৪২০টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ২৬১টি, তাহিরপুরে ১৪৬টি এবং শাল্লায় ১৪৩৫টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হবে।

মুজিববর্ষ এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি শাল্লা উপজেলায় ১৬০টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৩০টি, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫০টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ১০টি, ছাতক উপজেলায় ১০টি, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১০টি, দিরাই উপজেলায় ৪০টি, জগন্নাথপুর উপজেলায় ২৩টি, তাহিরপুর উপজেলায় ২৫টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৩০ টি, ধর্মপাশা উপজেলায় ৩৪টি এবং জামালগঞ্জ উপজেলায় ২৫টি পরিবারকে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়।

মুজিববর্ষ
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায় মোট বরাদ্দ হয়েছে ৭৮৭ টি ঘর। এরমধ্যে ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্বে হস্তান্তর হয়েছে ৩১৩ টি আর আগামী ২০ জুন ২য় পর্বে হস্তান্তর হবে ৪৪১ টি।মুজিববর্ষ এরমধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০০ টি, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায়  ১৫ টি, লাখাইয় উপজেলায় ২৮ টি, বাহুবল উপজেলায় ৬০ টি, বানিয়াচংয় উপজেলায় ১২০ টি, নবীগঞ্জ উপজেলায় ৪৮ টি, চুনারুঘাট উপজেলায় ৪০ টি এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৩০ টি পরিবারের মধ্যে এসব ঘর হস্তান্তর করা হবে।

মুজিববর্ষ এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫০ টি, বাহুবল উপজেলায় ২০ টি, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ২৫ টি, লাখাই উপজেলায় ১৮ টি, নবীগঞ্জ উপজেলায় ২৫ টি, বানিয়াচংয়ে ৩৭ টি, আজমিরীগঞ্জে ২০ টি, চুনারুঘাট উপজেলায় ৭২ টি আর মাধবপুর উপজেলায় ৪৬ টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়।

অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলায় মোট ১ হাজার ২২৬ টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এরমধ্যে ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্বে হস্তান্তর হয়েছে ৫৪২ টি আর ২০ জুন ২য় পর্বে হস্তান্তর করা হবে আটও ৬৯৯টি ঘর। এরমধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৩৭টি, রাজনগর উপজেলায় ৪২টি, কুলাউড়া উপজেলায় ৮৩টি, জুড়ি উপজেলায় ৮০টি, বড়লেখা উপজেলায় ১০৫টি, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২০০টি, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১৫২টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হবে। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলায় ১৫০ টি, জুড়ী উপজেলায় ৭ টি, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১০০ টি, কমলগঞ্জ উপজেলায় ৬০ টি, রাজনগর উপজেলায় ৯০ টি, কুলাউড়া উপজেলায় ৮৫ টি আর বড়লেখা উপজেলায় ৫০ টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়।

সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফজলুল কবির জানান, ‘মুজিববর্ষএ ভূমিহীন ও গৃহহীন সব পরিবারকে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২০ জুন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন ঘর উপহার দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন তিনি। ২০ জুন ২য় পর্যায়ের নতুন ঘর হস্তান্তরের যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন ঘর উপহার দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধনের পর সিলেট বিভাগের ৬ হাজার ২১২ টি গৃহহীন পরিবার এই ঘর পাবে।

আরও দেখুনঃ

সানগ্লাস বা রোদচশমা ব্যবহারের উপকারিতা !

Comments are closed.