মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের বাজার তদারকি বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশগ্রহণ করেন।

একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক  প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে বলেছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ নির্বাহী পদক্ষেপ ও নীতিগত পদক্ষেপের মাধ্যমে করা যায়।

আমরা ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্যের উপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) উঠিয়ে দিয়েছি, আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত কথা বলছেন। একইসাথে প্রয়োজন হলে বাজার অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মান্নান আরও বলেন, ১ কোটি পরিবারকে কম মূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ৪ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছেন। সরকারের এসব সার্বিক পদক্ষেপের কারণে চাল, ভোজ্যতেলসহ আরও কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চলতিবছরের আগস্ট মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, সেটি সেপ্টেম্বরে কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশে। রোপা আমনের ভাল ফলন হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সার্বিক মূলস্ফীতি কমতির দিকে এবং সামনে আরও কমবে।

বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, করোনা মহামরি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো পৃথিবীর অর্থনীতি বিশেষ করে বাজার ব্যবস্থা তছনছ হয়ে গেছে। তাই, দ্রব্যমূল্য নিয়ে আজ সারা পৃথিবীর মানুষ কষ্টে আছে। যার প্রভাব আমাদের উপর পড়েছে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি মন্দ জিনিসি কিন্তু আমাদের একার পক্ষে এর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় নয়।

বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রভাব নিয়ে তিনি আরও বলেন, বিদেশে দাম বাড়লে বেশি দামে আমাদের পণ্য কিনতে হয়, জাহাজ ভাড়া বেশি-সেটা পরিশোধ করতে হচ্ছে। তেল-গ্যাস বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবে, এর মধ্যেও আমাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভাল আছি। যেমন যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আর পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, গত সেপ্টেম্বরে ভারতে সাধারণ খাদ্য মুল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। সেই তুলনায় আমরা ভাল আছি।

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুশাসন তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, আসন্ন ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরাবস্থা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সরকার প্রধান দেশবাসীকে সঞ্চয়ী মানসিকতা গড়ে তোলার প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, তিনি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হতে বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতি স্বল্প সময়ে ফল পাওয়া যাবে এবং অধিক প্রয়োজন রয়েছে-এমন কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর সফল হওয়ায় একনেক সভায় তাঁকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরো জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ও শান্তির পক্ষে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যা বিশ্ব পরিমন্ডলে তাঁর পরিচিতিকে আরও সমুজ্জ্বল করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ৭৬তম বছরে পর্দাপন করায় একনেকের পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানানো হয়।

আরও দেখুনঃ

Comments are closed.