লিচু চোর কবিতা – কাজী নজরুল ইসলাম

লিচু চোর কবিতাটি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কাব্যগ্রন্থ “ঝিঙেফুল”  অন্তর্গত। লিচু চোর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি মূল্যবান রচনা। শিশু শিক্ষার জন্য এই কবিতা বা ছড়াটি অত্যন্ত কার্যকর একটি শিক্ষা উপকরণ।

লিচু চোর কবিতা - কাজী নজরুল ইসলাম
Kazi Nazrul Islam, কাজী নজরুল ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬।  ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও সঙ্গীতজ্ঞ। নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে এনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। কবিভবন তৈরি করে সেখানে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। তার কবিতা ও গান পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই বাংলাতেই  সমানভাবে সমাদৃত। নজরুলের কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষে-মানুষে বিভেদ, মানুষের উপরে অত্যাচার, সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তার এই প্রতিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে, তিনি বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত হন। নজরুল বাংলা কাব্যে ও গানে একটি নতুন ধারার জন্ম দেন, যার নাম ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। নজরুল অনেক শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। তিনি প্রায় ৩০০০ গান লিখেছেন এবং অধিকাংশ গানে সুর দিয়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ দেহত্যাগ করেন।

বঙ্গবন্ধু ও নজরুল বিশ্ব বাঙালির সমন্বিত রূপ : কবি নূরুল হুদা

 

লিচু চোর ছড়া

বাবুদের তাল-পুকুরে
হাবুদের ডাল-কুকুরে
সে কি বাস করলে তাড়া,
বলি থাম একটু দাড়া।

পুকুরের ঐ কাছে না
লিচুর এক গাছ আছে না
হোথা না আস্তে গিয়ে
য়্যাব্বড় কাস্তে নিয়ে
গাছে গো যেই চড়েছি
ছোট এক ডাল ধরেছি,

ও বাবা মড়াত করে
পড়েছি সরাত জোরে।
পড়বি পড় মালীর ঘাড়েই,
সে ছিল গাছের আড়েই।
ব্যাটা ভাই বড় নচ্ছার,
ধুমাধুম গোটা দুচ্চার
দিলে খুব কিল ও ঘুষি
একদম জোরসে ঠুসি।

আমিও বাগিয়ে থাপড়
দে হাওয়া চাপিয়ে কাপড়
লাফিয়ে ডিঙনু দেয়াল,
দেখি এক ভিটরে শেয়াল! …

সেকি ভাই যায় রে ভুলা-
মালীর ঐ পিটুনিগুলা!
কি বলিস ফের হপ্তা!
তৌবা-নাক খপ্তা…!

 

Kazi Nazrul Islam, কাজী নজরুল ইসলাম
Kazi Nazrul Islam, কাজী নজরুল ইসলাম

 

লিচু চোর কবিতার ইতিহাস:

যতদুর জানা যায় – ছোটদের জন্য পাঠ্যবই লিখতেন আলী আকবর সাহেব। একদিন তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে একটি পাণ্ডুলিপি দেখিয়ে তার মতামত চাইলেন। পুরো পাণ্ডুলিপিটি পড়ে নজরুল বললেন, আপনার পাণ্ডুলিপির ছড়াগুলো ছোটদের উপযোগী হয়নি। যদি বলেন তো আমি একটা ছড়া লিখে দিতে পারি।

এ প্রস্তাবে আলী আকবর সাহেব তো বেজায় খুশি। তিনি নজরুলকে অনুরোধ করলেন একটি ছড়া লিখে দেওয়ার জন্য। নজরুল দুই খিলি পান মুখে পুরে লিখলেন তার বিখ্যাত ‘লিচু চোর’ কবিতাটি : ‘বাবুদের তালপুকুরে/হাবুদের ডালকুকুরে/সে কি ব্যস করলো তাড়া/বলি, থাম একটু দাঁড়া…’

লিচু চোর কবিতার বিষয়বস্তু:

ছোটদের জন্য লেখা কাজী নজরুল ইসলামের সরল ও সুন্দর একটি কবিতা লিচু চোর। বাবুদের পুকুর পারের গাছ থেকে লিচু চুরি করতে গিয়ে মালির হাতে ধরা খাওয়া তারপর পালিয়ে গিয়ে বোসদের ঘরে আশ্রয় নেয়ার একটি ঘটনা ফুটে উঠেছে এই ছড়া কবিতার মাধ্যমে।

আরও দেখুন:

 

লিচু চোর কবিতা আবৃত্তি:

 

 

লিচু চোর ছড়ার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্নঃ- লিচু চোর কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তরঃ- লিচু চোর কবিতাটি “ঝিঙ্গেফুল” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

প্রশ্নঃ- লিচু চোর কবিতাটি কার লেখা?
উত্তরঃ- লিচু চোর কবিতাটি লিখেছেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।