লেবুর উপকারিতা এবং অপকারিতা !

লেবুর উপকারিতা এবং অপকারিতা : করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধের এই আবহে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা।  লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভয়ানক এই ভাইরাস। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। এই সময় আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ এর ক্ষমতা শক্তিশালী হওয়া খুব জরুরি হয়ে থাকলে ভালো। নইলে খুব সহজেই আমরা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে যেতে পারি।

করোনাকালীয় সময়ে পাতিলেবু খাওয়াটা বেশ জরুরি। বিশেষজ্ঞরা এই সময় অন্যান্য ঘরোয়া উপাদানের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে পাতিলেবু খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।পাতিলেবু রোগ প্রতিরোধ এর ক্ষমতা বাড়ায়। এতে সর্দি, কাশির এর মত সমস্যা দূর হয় নিমিষেই। তীব্র এই গরম এর কারনে শরীরকে সুস্থ রাখতে পাতিলেবু খাওয়া একটি অত্যন্ত জরুরি হয়ে থাকে। পাতিলেবু এর রস শরীর এর বিভিন্ন জায়গায় উন্নতিসাধন করে থাকে।

পাতিলেবু এর মধ্যে ভিটামিন সি বিদ্যমান। তাই এর কারণে কোন কাটাছেঁড়া জায়গা অত্যন্ত সহজ ভাবেই সেরে ওঠে থাকে। পাতিলেবু যদি খাওয়া যায় তবে হাড়, তরুণাস্থি অথবা টিস্যুর স্বাস্থ্যও সুস্থ থাকে।

পাতিলেবু বিএমআর বা বেসিক মেটাবলিক রেট ভালো রাখে, শরীরে পিএইচ ব্যাল্যান্স সঠিক অবস্তায় রাখে। এমনকি রক্তে পিএইচ এর হার সঠিকভাবে বজায় রাখে।পাতিলেবু দৌড়ঝাঁপ করার জন্য শক্তি যোগায় এবং ক্রমশই এনার্জি বাড়ায় ৷পাতিলেবুর এক নয় এর রয়েছে অনেক গুণ।

প্রতিদিন পাতিলেবু একটু উষ্ণ গরম পানির সঙ্গে খেলে অবাঞ্ছিত সকল মেদ ঝরে যায়। এমতাবস্থায় চিকিৎসকদের পরামর্শ না নিয়ে ভিটামিন ট্যাবলেট, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ, এসব অনেকেই খেয়ে থাকেন। তবে আমাদের রোজকার রান্নাতেই আছে এমন কিছু অনেক উপাদান আছে, যারা নিশ্চুপে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। লেবু এমন একটি ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় যার কোন বিকল্প নেই।

লেবুর উপকারিতা এবং অপকারিতা সমূহগুলো হলোঃ

উপকারিতা :

১.  লেবু এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি-এর উৎস। এই ভিটামিন শরীরকে সুস্থ রাখতে দীর্ঘমেয়াদি সময়ের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে।

লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড।
লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড।

২. খাওয়ার আগে লেবুজল খেলে জিভের স্বাদ বৃদ্ধি পেয়ে জায়। এছাড়া লেবুজল শরীরে শর্করা এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও বিপাক ক্রিয়ার মাত্রা বাড়ায়। ফলে খাওয়ার আগে লেবুজল খাওয়া উপকারী একটি অভ্যাস।

৩. লেবুতে যে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, তা কিডনিতে পাথর জমার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এছাড়া, যাদের কিডনিতে পাথর জমেছে তারাও নিয়মিত লেবুজল খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

৪. দিনকাল এমন যে, কারও হাঁচির শব্দ শুনলেও লোকে আঁতকে উঠছে। তার মধ্যে এসে গিয়েছে বর্ষা। এমন অবস্থায় ঘনঘন সর্দি-জ্বরের সমস্যায় যারা ভোগেন তারা কিন্তু নিয়মিত লেবুজল খেলে উপকার পাবেন।

৫. সর্দির সময়ে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগে থাকেন অনেকে। এক গ্লাস পানিতে আধখানা পাতিলেবু এর রস গুলে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর একঢোকে তা  খেয়ে নিন। সঙ্গে-সঙ্গে এই নাক বন্ধের সমস্যা এর থেকে মুক্তি পাবেন ।

৬. যারা ইউরিক অ্যাসিডের কারণের জন্য গাঁটের ব্যথায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত লেবুজল বা লেবুর সরবত খেলে ভীষণ উপকার পাবেন।

৭. মাদকাসক্তি হতে বেরিয়ে আসতে চান অনেকেই। তারাও যদি নিয়মিত লেবুজল খায় আর ওই আসক্তি থেকে অনেকটা রেহাই পাবেন।

৮. লেবু‌জলের মিশ্রণ শরীরের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া মারতে সাহায্য করে। ফলে ওই মিশ্রণ পান করলে ফু‌ড পয়জনিংয়ের মতো পেটের সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

৯. এই পাতিলেবু শরীর এর ল্যাকটিক অ্যাসিড এর তৈরির সকল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফলে বৃদ্ধি পায় শরীরের সামগ্রিক সকল একাধিক ধরনের কার্যকারিতা।

১০. এসবের পাশাপাশি লেবুতে থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, যা আমাদের দাঁত এবং হাড়ের গঠনেও সাহায্য করে।

অপকারিতা :

এতসব উপকারিতা সত্ত্বেও কিন্তু সাবধান! লেবু বেশি খেলেও হতে পারে হিতে বিপরীত! লেবু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে আসে। তাই অনেকেই নিজ বাসাবাড়িতে নিয়মিত লেবু রাখেন । কিন্তু লেবুর রসের চেয়ে এর খোসা আরো বেশি কার্যকর। বেশ কিছু গবেষণার দেখা গিয়েছে, লেবুতে যে পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, তার থেকে প্রায় ৫-১০ গুণ বেশি ভিটামিন রয়েছে কিছু খোসার মধ্যে। সেই সঙ্গে এর মধ্যে আরো আছে বিটা ক্যারোটিন, ফলেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম আর পটাশিয়াম। যা আমাদের শরীর এর জন্য অনেক বেশি উপকারী বলে ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লেবুর খোসার মধ্যে রয়েছে নিউট্রিয়েন্টস, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। এ ছাড়াও লেবুর খোসার মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা জটিল রোগব্যাধি প্রতিরোধ করে থাকে।

বেশি খাওয়ার অপকারিতাঃ

১. অত্যধিক পরিমানে লেবু খেলে দাঁতের মধ্যে থাকা এনামেল ক্ষয়ে যায়।

২. মুখের মধ্যে থাকা নরম জাতীয় কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সেখান হতে মুখের মধ্যে ফোড়া কিংবা ফুসকুড়ি হওয়ার সেই আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৩. খালি পেটে লেবু খেলে আমাদের শরীরের জন্য যে প্রয়োজনীয় উৎসেচক ধরনের পেপসিন থাকে সেটি ভেঙে যায়, কিন্তু এই পেপসিনটি আমাদের হজমে সাহায্য করে।

৪. অতিরিক্ত লেবু খেলে অ্যাসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, বারবার বাথরুম পাওয়া আর শরীর শুকনো হয়ে যাওয়ার মতো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকতে পারে।

৫. অতিরিক্ত পরিমানে সাইট্রিক অ্যাসিড শরীর এর আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। এই মাত্রা প্রয়োজনাতিরিক্ত হলে সেটি কিন্তু একটি মুশকিল বিষয়।

৬. সাইট্রাস মাইগ্রেন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা হয়ে থাকে তাঁদের এমনিতেই লেবু জাতীয় ফল না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে পরামর্শকরা।

 

লেবু সর্ম্পকে আরও জানতেঃ

আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল:

বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।