হজ্ব প্যাকেজ নির্ধারণ : সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য হজ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্যাকেজ আজ অনুষ্ঠিত হজ্ব ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়েছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য হজ্ব প্যাকেজ নির্ধারণের জানিয়ে বলা হয়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য হজ্ব প্যাকেজ নির্ধারণ
অনুমোদিত প্যাকেজের উল্লে¬খযোগ্য বিষয়গুলো নিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পর্বে কোন ব্যয় বৃদ্ধি হয়নি। সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এ সর্বমোট ৫,২৭,৩৪০.০০ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২০ সনের তুলনায় ১,০২,৩৪০.০০ টাকা বেশি।
২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩.০০ টাকা। এখন এই বিনিময় হার ২৪.৩০ টাকা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরব পর্বে সকল খাতের উপর ১৫ ভাগ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোয়াচ্ছাছা এর খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। প্যাকেজ মূল্য বৃদ্ধির জন্য এই কারণগুলো দায়ী।
সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-২ এ সর্বমোট ৪৬২,১৫০.০০ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২০ সনের তুলনায় ১,০২,১৫০.০০ টাকা বেশি। ২০২০ সনে ৩,১৫,০০০.০০ টাকার তৃতীয় আরেকটি প্যাকেজ ছিল। এ বছর ৩য় প্যাকেজ রাখা হয়নি। ২০২০ সনের ৩টি প্যাকেজের যে কোনটিতে নিবন্ধিত হজ-যাত্রীকে ২০২২ সনের জন্য ঘোষিত প্যাকেজ-১ অথবা প্যাকেজ-২ এর যে কোন একটি প্যাকেজ নির্বাচন করে, প্যাকেজ স্থানান্তরের মাধ্যমে ২০২২ সনের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
এক্ষেত্রে ব্যাংকসমূহ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ই-হজ সিস্টেমে প্যাকেজ স্থানান্তরের উক্ত অর্থ প্রাপ্তি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করবে। অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে, হজ-যাত্রীকে ই-হজ সিস্টেম হতে তাঁর পিলগ্রিম আইডি (চওউ) প্রদান করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় , দ্বি-পাক্ষিক হজচুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪,০০০ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩,৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭,৫৮৫ জন হজ-যাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনের সুযোগ পাবেন।
হজ-যাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়ালি¬ম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসেব করে ২০২২ সালের সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য ২টি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিসমূহের জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে সৌদি সরকারের হজের ঘোষণা প্রদানে বিলম্ব এবং এখন পর্যন্ত সৌদি আরব হতে জনপ্রতি প্রকৃত খরচের বিবরণী না পাওয়ায়, সম্ভাব্য ব্যয় বিবেচনা করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ-যাত্রীদের জন্য হজ প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে।
অন্যদিকে যদি কোনো কোটা খালি থাকে, তাহলে অবশিষ্ট কোটা পূরণের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রম অনুসারে পরিচালক, হজ অফিস ঢাকার অনুমোদনক্রমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন। ২০২০ সনে যে সকল নিবন্ধিত হজ-যাত্রী প্যাকেজ স্থানান্তরের মাধ্যমে ২০২২ সনে নিবন্ধন চূড়ান্ত করবেন না, অথবা হজে যেতে পারবেন না, তাঁদের হজ নিবন্ধন বাতিল হবে এবং তাঁরা বিধি মোতাবেক প্রদত্ত অর্থ ফেরত পাবেন।
সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর হজ-যাত্রীগণ পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ মিটারের মধ্যে এবং প্যাকেজ-২ এর হজ-যাত্রীগণ সর্বোচ্চ ১৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ-যাত্রীর জন্য ৪,৫৬,৫৩০.০০ টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সিগণ সরকারি ব্যবস্থপাপনার প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এজেন্সির সাথে হজ-যাত্রীর চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সনে নিবন্ধনের অর্থ সমন্বয় করে ২০২২ সনের প্যাকেজে ঘোষিত অবশিষ্ট অর্থ, নিবন্ধনকারী সংশি¬ষ্ট হজ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে আগামী দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমা প্রদান করবেন।
হজযাত্রীর কাছ হতে প্যাকেজে ঘোষিত অর্থ প্রাপ্তির পরেই সংশি¬ষ্ট এজেন্সি তাঁর পিলগ্রিম আইডি (চওউ) প্রদান করবেন।উল্লে¬খ্য, সংশি¬ষ্ট এজেন্সি বিমান ভাড়া বাবদ গৃহীত অর্থ সংশি¬ষ্ট এয়ারলাইন্স বরাবর টিকিটের জন্য পে-অর্ডার এর মাধ্যমে প্রেরণ করবেন।
বিমানের টিকেট বাবদ গৃহীত অর্থ, এজেন্সি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবে না। হজ-যাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী সরাসরি পে-অর্ডারে মাধ্যমে এয়ারলাইন্সকে উক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন বাবদ গৃহীত অথর্, আইবিএএন (ওইঅঘ) এর মাধ্যমে সৌদি আরবে প্রেরণ ব্যতিত এজেন্সি উত্তোলন করতে পারবে না।
অন্যদিকে এ বছর জড়ঁঃব ঃড় গধশশধয ওহরঃরধঃরাব এর আওতায় ঢাকার হজ-যাত্রীদের শতভাগ হজ-যাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন, ঢাকায় সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজ-যাত্রী প্রেরণ করতে পারবে। হজ এজেন্সি ব্যতিত অন্য কোন এজেন্সির নিকট হজ-যাত্রীর বিমান টিকেট বিক্রয়ের জন্য অনুমতি প্রদান করা যাবে না। কোন হজ এজেন্সিকে কোন অবস্থাতেই ৩০০ এর অধিক টিকেট প্রদান করা যাবে না।
পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনের নিমিত্ত হজ-যাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত থাকতে হবে, প্রতি ৪৪ জন হজ-যাত্রীর জন্য একজন করে গাইড নিয়োগ করা হবে।
রাজকীয় সৌদি সরকারের ঘোষিত নিয়ম অনুসারে, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য বিদ্যমান প্রতিস্থাপন (রিপে¬সমেন্ট) প্রক্রিয়ার পরিবর্তে হজ এজেন্সি ইউজার, তাঁর এজেন্সিতে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে নিবন্ধিত এবং ২০২০ সনে নিবন্ধনের সময় উক্ত নিবন্ধিতের সঙ্গে সংশি¬ষ্ট নিবন্ধিত ৬৫ বছরের কম বয়সী মহিলা / অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের, যাঁরা মাহরামজনিত কারণে যেতে পারবেন না, সেই তালিকার বিপরীতে সমসংখ্যক প্রাক নিবন্ধিতকে সরাসরি পিলগ্রিম আইডি প্রদান করতে পারবেন।
এই তালিকার জন্য কোটা নির্ধারিত থাকবে না। সৌদি আরবে হজ এজেন্সির কোটা প্রেরণের পরে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ-যাত্রীগণকে প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত খাবার বাবদ পরিশোধিত অর্থ, হজে যাওয়ার প্রাক্কালে ফেরত প্রদান করা হবে।
হজযাত্রীদের কুরবানী বাবদ ব্যয়ের অর্থ সৌদি ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা সৌদি সরকার অনুমোদিত এ ধরণের অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করার জন্য রাজকীয় সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
এই জন্য হজযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌ.রি. এর সমপরিমাণ ১৯,৬৮৩.০০ টাকা সঙ্গে নিতে হবে।
আরও দেখুনঃ